লেখা-লেখি

বাবা আলাউদ্দিন খাঁ

১:১৭:০০ AM 0 Comments






















© সুনীতি দেবনাথ


আমাদের দেশ ভারত হচ্ছে সঙ্গীতের দেশ। এদেশের রাজা -মহারাজা, নবাব -বাদশা -সুলতানগণ তাঁদের দরবারে প্রতিষ্ঠিত সুগায়কদের সম্মানিত আসনে বসিয়ে কোন প্রাচীনকাল থেকে সঙ্গীতজ্ঞ ও সঙ্গীতকে শ্রদ্ধা, সমাদর ও সম্মান দেখিয়েছেন। উচ্চাঙ্গসংগীতের অন্যতম অভিধা তাই দরবারী সঙ্গীত। আরো আগে বৈদিক সভ্যতায় সঙ্গীতের প্রাধান্য ছিল। বেদের ওম্ ধ্বনি থেকে সৃষ্ট সপ্ত স্বর গড়ে তুলেছে ক্লাসিক্যাল বা ধ্রুপদী সঙ্গীতের সুবিশাল জগৎ। আর বেদের তৃতীয় সামবেদ তো সঙ্গীতের সমাহার। ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীত গড়ে উঠেছে সঙ্গীত, নৃত্য আর যন্ত্রসঙ্গীতের সমবায়ে। উত্তর ও দক্ষিণ ভারত ভেদে তা আবার হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও কর্ণাটকী সঙ্গীত এই দুটি ভাগে বিভক্ত। এই বিভাজনের কারণ গায়ন শৈলী, অনুশীলন পদ্ধতি ও অন্যান্য কারণ। সমাজের উচ্চকোটির মানুষের জন্য এই অভিজাত সঙ্গীত শৈলীর পাশাপাশি প্রাকৃতজনের সৃষ্ট ও উপজীব্য সঙ্গীতধারা প্রকৃতির মত স্বতোৎসারিতভাবে মাটির ঘ্রাণে, জলের তরঙ্গে, বাতাসের হিল্লোলে, মনের আনন্দ বেদনায় গড়ে উঠেছে মাঠে - ঘাটে - বাটে। আর তা লোকগীতি আউল - বাউল - সুফি ইত্যাদি নানা কিছু নিয়ে প্রাকৃত জনের সুর লহরী সারা দেশের অন্তর ছুঁয়ে প্রবাহিত।
বাবা আলাউদ্দিন খাঁ জীবনের প্রারম্ভে লোক জীবনের বাউল, ভাটিয়ালী , ভাওয়াইয়ার প্রান্তরে পরিভ্রমণ করে বয়স দশ পেরোবার আগেই সুরের টানে ঘর ছেড়েছিলেন। এরপর কত শ্রম- সাধনা, কত অভিজ্ঞতা আর নানা গুরু সঙ্গ। এতো কিছুর পর একদিন ভারতের সঙ্গীত জগতে উজ্জ্বল এক নক্ষত্রে পরিণত হতে পারলেন। অবিশ্বাস্য কাহিনী মনে হয় তাঁর জীবন সাধনাকে।
সঙ্গীতে ত্রিপুরা রাজ্যের সুনাম সেই রাজন্য আমল থেকে। রাজন্য শাসিত আমলে রাজারা সঙ্গীতপ্রিয় ছিলেন বটে , অন্দরমহলে রাণী রাজকন্যা, দাসদাসী সকলেই যেন সুর তরঙ্গে আন্দোলিত হতেন। ত্রিপুরার অরণ্য - প্রান্তর, মাঠ- ঘাট সর্বত্রই সঙ্গীতের সুর মূর্ছনা আন্দোলিত হয়। এমনি একটা প্রেক্ষিতে আলাউদ্দিন ত্রিপুরার মাটিতে 6 সেপ্টেম্বর 1862 খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ত্রিপুরার ভূমিপুত্র তিনি। ভারতে তখন ব্রিটিশ শাসন, ত্রিপুরা এখনকার মত ছোট্ট রাজ্য নয়। সে সময় বর্তমান বাংলাদেশের শ্রীহট্ট, কুমিল্লা ইত্যাদি নিয়ে স্বাধীন ত্রিপুরা বলে খ্যাত ছিল। এই স্বাধীন ত্রিপুরার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান তিনি। তাঁর পিতা সবদার খাঁ, সাধু খাঁ নামে যাঁর পরিচিতি ছিল। আলাউদ্দিনের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার নাম ছিল আফতাবউদ্দিন খাঁ আলাউদ্দিনের জন্মস্থান বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সীমানায় পড়েছে। শৈশবে বাবা ও বড়ভাইয়ের কাছে তাঁর সঙ্গীত শিক্ষার শুরু। শৈশবের সেই মুুক্ত দিনগুলিতে গ্রামের মাঠ ঘাট, বিলের পার, নদীঘাট, সবুজ শ্যামল বনানীর পাশে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। আর তাঁর সমগ্র সত্তায় বাউল, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়ার সুর মত্ত আলোড়ন তুলত। সঙ্গীতের তাড়নায় স্বগৃহের সীমানায় ছটফট করত তাঁর বালক মন। পাখির মত ডানা মেলে সঙ্গীতের মহাগগনে উড়াল দিতে চাইত তাঁর মন। আর তাই একদিন আপনজন আপন পরিচিত দুনিয়া ছেড়ে অনির্দিষ্ট জগতে পাড়ি দিলেন। কারও মতে তখন তাঁর বয়স আট বছর, কারও মতে দশ। বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি প্রথম একটা যাত্রাদলে যোগ দিলেন। উনিশ শতকের যে সময়ে তিনি যেমন যাত্রাদলে যোগ দিলেন তা ছিল আদি অকৃত্রিম বাংলা যাত্রাপালা এবং বাঙালির সম্পদ। পরবর্তীকালের শান্তিগোপালের বিশ্ব খ্যাত বিবর্তিত পালার সঙ্গে এগুলোর রাতদিন তফাৎ। যাক এই অভিজ্ঞতা বাংলার ট্রাডিশনাল লোকগীতিতে তাঁকে সমৃদ্ধ করল। তবে সঙ্গীত মহাসমুদ্রের কলকল্লোলে উতলা আলাউদ্দিন যাত্রাপালার নিরালার ছোট নদীর কুলকুল ধ্বনিতে তৃপ্ত থাকতে পারেন কি করে?
  কিছুদিন পর তিনি কলকাতা চলে গেলেন। আলাউদ্দিনের জীবনের প্রথম চল্লিশটা বছর এক অদ্ভুত অতৃপ্তিসঞ্জাত রহস্যময়তা আর রোমাঞ্চতায় ঘিরে ছিল। সঙ্গীত সন্ধানী তাঁর উড়ুউড়ু মন তৃপ্তি পাচ্ছিল না। তাই ছুট্ কেবল ছুট্। কলকাতা এসে তিনি গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য ওরফে নুলো গোপালের শিষ্যত্ব নিলেন। গোপাল কৃষ্ণ পরম স্নেহে পনেরো বছরের আলাউদ্দিনকে শিষ্য রূপে গ্রহণ করলেন। তিনি ধ্রুপদ, ধামার ও খেয়ালে অত্যন্ত পরিশীলিত ও সুদক্ষ গুরু ছিলেন। তাঁর পরিকল্পনা ছিল বারো বছরে আলাউদ্দিনকে শিক্ষা দিয়ে পাকাপোক্ত করে দেবেন। গোপাল কৃষ্ণ তবলা, পাখোয়াজ এবং কণ্ঠসঙ্গীতের প্রাথমিক মৌল শিক্ষা দিলেন। যন্ত্রসঙ্গীত শিক্ষার প্রতি আলাউদ্দিনের অত্যন্ত আগ্রহ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে গুরু গোপাল কৃষ্ণের মৃত্যু হল।
   গুরুর মৃত্যুর পর আলাউদ্দিন কলকাতার বিখ্যাত স্টার থিয়েটারের সঙ্গীত পরিচালক অমৃত লাল দত্তের শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন। অমৃতলাল দত্ত ওরপে হাবু দত্ত স্বামী বিবেকানন্দের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছিলেন। তিনি আলাউদ্দিনকে স্টার থিয়েটারের বাদকদলে নিযুক্ত করলেন। ব্যাণ্ড বাদক হিসেবে পাশাপাশি গুরুর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা চলতে থাকে। এর পাশাপাশি গোয়া থেকে আগত ব্যান্ডমাস্টার মি.লোবোর নিকট পাশ্চাত্য ক্ল্যাসিকাল সঙ্গীতে বেহালা বাদনও শিখতে লাগলেন। কলকাতা থাকাকালে বাংলা মঞ্চের অর্কেষ্ট্রার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন।
    কয়েকবছর পরে বিশ বছর বয়সে মুক্তাগাছিয়ার (বর্তমান বাংলাদেশ) জমিদার জগৎ কিশোর আচার্যের বাড়িতে কনসার্টে সরোদবাদন শুনলেন। স্বনামধন্য ওস্তাদ আহমেদ আলি খাঁ ছিলেন সেই মহফিলের আশ্চর্য সরোদবাদক। এই অভিজ্ঞতা আলাউদ্দিনকে চমকে দিল, দিওয়ানা করে দিল। এর আগে আলাউদ্দিন আহমেদ আলি খাঁ সাহেবের সরোদবাদন শুনেননি। আহমেদ আলি খাঁর গুরু ছিলেন আসগর আলি খাঁ সাহেব। আসগর আলি খাঁ ওস্তাদ আমজাদ আলি খাঁয়ের পিতার ঠাকুর্দার ভাই। সে হিসেবে আমজাদ আলি খাঁয়ের ঠাকুর্দা।
   ওস্তাদ আহমেদ আলি খাঁয়ের সরোদবাদনে আত্মহারা আলাউদ্দিন বারবার তাঁর কাছে সরোদবাদন শিক্ষার জন্য অনুনয় বিনয় করতে লাগলেন। 
ওস্তাদ আহমেদ আলি খাঁ বাংলার দিনাজপুরের এক রাজদরবারের সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। পাঁচবছরে নিজের সবটুকু দিয়ে আলাউদ্দিন সরোদবাদন শিখলেন। পরবর্তীতে গুরুর সঙ্গে রামপুর যেতে হল এবং শিক্ষায় তাঁর একনিষ্ঠতায় একটুও চিড় ধরল না। শিষ্যের একাগ্রতা ও পারদর্শিতা দেখে গুরু বুঝলেন এবার তাঁর উপযুক্ত শিষ্যের ' গোঁড়া বন্ধন 'এর সময় হয়েছে। গোঁড়া বন্ধন মানে গুরু - শিষ্যের অবিচ্ছেদ্য ও আজীবন সম্পর্কের এক পবিত্র বন্ধন ক্রিয়া। আলাউদ্দিন রামপুর নবাব দরবারের সুবিখ্যাত ও সুদক্ষ বীণাবাদক ওস্তাদ ওয়াজির আলী খাঁর বীণাবাদনের নৈপুণ্যের কথা শুনে বীণাবাদনের প্রতি আকৃষ্ট হন। ওস্তাদ ওয়াজির আলী খাঁ ছিলেন কিংবদন্তী সঙ্গীতজ্ঞ তানসেনের সাক্ষাৎ শিষ্যদের অন্যতম ছিলেন। শিষ্যের মনোভাব বুঝতে পেরে আহমেদ আলী খাঁ সাহেব আলাউদ্দিনকে ওস্তাদ ওয়াজির আলী খাঁয়ের হাতে সঁপে দিলেন। আলাউদ্দিন খাঁ ওস্তাদ ওয়াজির আলী খাঁয়ের সম্মতিক্রমে তাঁর সঙ্গীতজ্ঞ শিষ্যমণ্ডলীতে সামিল হলেন এবং ওয়াজির আলী খাঁয়ের কাছে তানসেনের নিজস্ব সঙ্গীত ঘরানা অর্থাৎ ' Tansen School Of Music ' সেনিয়া ঘরানায় বীণাবাদন শেখেন। ইতিমধ্যে আলাউদ্দিন রামপুর স্টেট ব্যাণ্ডে বেহালাবাদক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। তিনি শাস্ত্রীয় ধ্রপদ, ধামার, হোরি এসবও শিখে নিলেন যাতে করে নানাপ্রকার বাদ্যযন্ত্র যেমন সুরশৃঙ্গার, সেরনিয়াবাত রবাবে এসবও বাজাতে পারেন। এসব বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষা তিনি ওস্তাদ ওয়াজির আলী খাঁয়ের কাছেই পেয়েছিলেন। 
   ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সাহেব কিছুকাল পরে মধ্যপ্রদেশের মাইহার স্টেটের রাজসভার সঙ্গীতশিল্পী রূপে যোগদান করেন। মাইহার স্টেটের রাজা ব্রিজনাথ সিং পরম শ্রদ্ধায় তাঁকে রাজসভার সকল সঙ্গীতজ্ঞদের পুরোভাগে স্থান দিলেন। তিনি হলেন রাজসভার সঙ্গীতশিল্পীদের গুরু। তখন থেকেই আলাউদ্দিন মাইহারের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেলেন। এসময় তিনি ধ্রুপদ, ধামার, খেয়াল, হোরি, টপ্পা, ঠুংরি এসব ক্ল্যাসিক্যাল কণ্ঠসঙ্গীতের শিক্ষাদান করছিলেন। কণ্ঠসঙ্গীতের পাশাপাশি নানাপ্রকার যন্ত্রসঙ্গীতের শিক্ষাও দিয়ে যাচ্ছিলেন।এতদিনের শিক্ষার্থী এবার সুদক্ষ শিক্ষাগুরু। সেনিয়া ঘরানার বীণা, রবাব, সরোদ, সেতার, বেহালা, সুরবাহার এসব যন্ত্রসঙ্গীতের সুনিপুণ গুরু এখন তিনি। অসামান্য সঙ্গীত প্রতিভা তাঁকে অনন্যতার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। বিপুল খ্যাতি অর্জন. করলেন তিনি।
   রাজদরবারের সঙ্গীতগুরু হিসেবে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সাহেব ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের মাইহার ঘরানাকে  সম্পূর্ণরূপে গড়ে তুললেন। মাইহার ঘরানা প্রকৃতপক্ষে উনিশ শতকের সৃষ্ট সম্পদ। কিন্তু বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের নিরলস সাধনা ও প্রয়াসে তাঁর সমকালে এই ঘরানা বিপুল বৈভবে পরিপুষ্টির হয়ে বিকশিত হল, প্রতিষ্ঠা পেল। তাঁর অবদান এতোখানি মৌলিক ছিল যে জন্য অনেক সময় তাঁকে এই ঘরানার প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। তখন এমন একটা দ্রুতগতির বিবর্তনের কাল চলছিল ধ্রুপদী যন্ত্রসঙ্গীতের জগতে। খাঁ সাহেব একাধারে একনিষ্ঠ বীণাবাদক ও ধ্রুপদাঙ্গের শিল্পী ছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি বীণা, সুরবাহার ( bass sitar) ও সুরশৃঙ্গার ( bass sarod) এসবকে অনেক ক্লাসিক্যাল যন্ত্রসঙ্গীতের সঙ্গে দক্ষতার সাথে ব্যবহার করতে পেরেছেন। তাঁর এই কৃতিত্ব চিরস্মরণীয়। 
    1926 খ্রিস্টাব্দে নিজের বাসভবন ' মদিনা ভবন '-এ আলাউদ্দিন দরিদ্র সহায়সম্বলহীন সঙ্গীতপ্রেমী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সঙ্গীত বিদ্যালয় স্থাপন করেন। কালক্রমে এই শিক্ষাকেন্দ্র তাঁর বাসভবনকেই একটি সঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্রে রূপান্তরিত করল। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদ্যযন্ত্রের সমাহারে সুসজ্জিত এক অভিনব অর্কেষ্ট্রা গড়ে তুললেন। এই অর্কেষ্ট্রা পরবর্তী সময়ে ' মাইহার ব্যাণ্ড ' বা ' মাইহার বাদ্যবৃন্দ ' নামে পরিচিতি লাভ করল।
   সঙ্গীতের জন্য আলাউদ্দিন বাল্যকালে স্বজন ও স্বগৃহ ত্যাগ করে পরিব্রাজকের মত সঙ্গীত তীর্থে তীর্থে দিওয়ানা হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন।  প্রতিভা, একনিষ্ঠতা, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ে দুহাত ভরে কুড়িয়েছেন সঙ্গীতের মণিরত্নাদি। তাঁর চরিত্রের মহৎ গুণ ছিল নিরভমানিতা। কিন্তু সঙ্গীতনিষ্ঠা তাঁর কাছে সবচেয়ে মূল্যবান ছিল। তাঁর অন্নদাতা মাইহাররাজ ব্রিজনাথ সিং যখন তাঁর শিষ্য, সে সময় রাজার হাতুড়ি দিয়ে তবলায় সুর বাঁধার সময় রাজার সামান্য ত্রুটির জন্য রাজার দিকে হাতুড়ি ছুঁড়ে মারেন। অমায়িক সহজ সরল হলেও আলাউদ্দিন সঙ্গীত শিক্ষায় শিষ্যের সামান্যতম অবহেলা মানতে পারতেন না। এমনি ছিল তাঁর সঙ্গীত প্রেম! 
   আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের সমগ্র সঙ্গীত জীবনের সঙ্গে তিনটি মৌলনীতি অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত থেকে তাঁকে পরিচালিত করেছিল,নিয়ন্ত্রিত করেছিল। আর এই তিনটি নীতি হচ্ছে — ১) প্রকৃত সঙ্গীত জ্ঞান অর্জনের জন্য আত্মার সীমাহীন অন্বেষণ, ২) লব্ধ জ্ঞানের বিশুদ্ধতা রক্ষা ও সর্বোচ্চ স্তরে উন্নয়নের জন্য নিয়ত পরিচর্যা করা এবং ৩) তিনি যেসব শিষ্য বা শাগরিদদের উপযুক্ত মনে করবেন তাঁদের বিস্তৃত পরিসরে নিবিড় তালিম দেওয়া। সারাটা জীবন এই নীতিমালাকে তিনি সত্য মেনেছেন এবং পালন করেছেন। বংশ পরম্পরায় তিনি সঙ্গীতবিদ্যার উত্তরাধিকার পাননি, অধ্যবসায়, শ্রম ও নিষ্ঠা দ্বারা তা অর্জন করেছেন। তাঁর জীবনই তাঁর অর্জিত শিল্পের বিষয়ে প্রামাণ্য সত্য, আর বিশ্বস্ত ও আন্তরিক সীমাহীন পরীক্ষা - নিরীক্ষার প্রামাণ্য ক্ষেত্রও বটে । তাঁর সঙ্গীত সাধনার ক্ষেত্র আজীবন ব্যাপ্ত। আর সঙ্গীত সাধনায় পরীক্ষা -নিরীক্ষা ছিল তাঁর কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। নিয়ত সঙ্গীত নিয়ে এমনিতরো পরীক্ষা - নিরীক্ষা তাঁকে সঙ্গীতের সত্তার সান্নিধ্যে নিয়ে গেছে, নব নব সৃষ্টির আলোকোজ্জ্বল জগতে তাঁকে উত্তীর্ণ করেছে। সম্ভবত নিজ জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতাই তাঁর মনে সংকীর্ণ ও নিম্নমানের শিক্ষাদানের প্রতি বিতৃষ্ণ করে তুলেছিল। সেজন্যই নিজে তিনি একজন আদর্শ শিক্ষাগুরুর বিমূর্ত প্রতীক হতে পেরেছেন। আর এখানেই তিনি অসামান্য। 
    বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের শিষ্যমণ্ডলীতে তাই বিশ্ববন্দিত শিল্পীরাই ছিলেন। তাঁর পুত্র ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ, কন্যা অন্নপূর্ণা দেবী ( রোশনারা খানম্), পণ্ডিত তিমির বরণ, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, মাইহারের মহারাজা ব্রিজনাথ সিং, পণ্ডিত পান্নালাল ঘোষ, পণ্ডিত নিখিল ব্যানার্জি, শরণরাণী, পণ্ডিত যতীন ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য, আলাউদ্দিনের ভ্রাতুষ্পুত্র ওস্তাদ বাহাদুর খান। আরও ছিলেন আলাউদ্দিনের নাতি - নাতনীরা —আশিস খান, শুভো শঙ্কর ( পণ্ডিত রবিশঙ্কর ও অন্নপূর্ণা দেবীর পুত্র), ধ্যানেশ খান, আমিনা পেরেরা, প্রাণেশ খান এবং অমরেশ খান।
    নীতিগতভাবেই আলাউদ্দিন সঙ্গীতগুরু হিসেবে কোনদিনই শিষ্যদের কাছ থেকে নগদ অর্থ বা কোন উপহার সামগ্রী গ্রহণ করেননি। বরং শিক্ষাদানকালে শিষ্যদের সমস্ত ভরণপোষণের দায়দায়িত্ব নিজে বহন করেছেন। এই বিষয়টা প্রাচীন ভারতের গুরুকুল প্রথাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আরো মনে হয় বাবা আলাউদ্দিন সঙ্গীত শিক্ষার জন্য সারাটি জীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন, সেই দুর্বিষহ অভিজ্ঞতাতেই যেন সঙ্গীত শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য স্নেহময় হাতে ছত্রছায়া ধারণ করে থেকেছেন।
    সরোদে কনসার্ট বাদন করলেও আলাউদ্দিন দক্ষতা সহ নানাপ্রকার বাদ্যযন্ত্র বাজাতে সক্ষম ছিলেন। তাঁর মধ্যে যে মহান ক্ষমতা ছিল তার বলে অর্জিত বিদ্যাকে অবলীলাক্রমে অধ্যাপনার কাজে ব্যবহার করতে পেরেছেন। বাদ্যযন্ত্র ও তারযন্ত্রের যে জ্ঞান তিনি অর্জন করেছিলেন তা সাবলীলভাবে পরবর্তী প্রজন্মের হাতে পরিশীলিতভাবে তুলে দিতে পেরেছিলেন। 
    আলাউদ্দিন পুত্র আলী আকবর খানকে সরোদ শিক্ষা দেন, কন্যা অন্নপূর্ণা দেবী তাঁর কাছে সুরবাহার শেখেন। শিষ্য রবিশঙ্কর ও নিখিল ব্যানার্জি সেতার বাদন শেখেন, যতীন ভট্টাচার্য ছিলেন সরোদ বাদক, রবিন ঘোষ বেহালা বাদক, ব্রিজনাথ সিং ও পান্নলাল ঘোষ বাজাতেন বাঁশের বাঁশি। পুত্রকন্যা ও শিষ্যমণ্ডলী নিয়ে এভাবেই গড়ে ওঠে তাঁর মাইহার ব্যাণ্ড। তাঁর সযত্নে লালিত পালিত ও পূর্ণাবয়বে সুগঠিত মাইহার ঘরানার দুই শিল্পী পণ্ডিত রবিশঙ্কর ( জামাতা) ও পুত্র আলি আকবর খান স্বদেশ সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব দরবারের খ্যাতিমান দুই মহাজ্যোতিষ্ক। ভারতাত্মার মর্মবাণী শিল্গৈশ্বর্য এই দুই বিরল প্রতিভাধর শিল্পী উন্মুখ বিশ্ববাসীর সামনে উজাড় করে তুলে দিয়েছেন। স্বদেশ -বিদেশে তাঁদের শিল্প ঘরানার প্রতি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের তালিমের ব্যবস্থা করেছেন। সারা পৃথিবীর শিল্প বোদ্ধা ও রসিক সমাজ আজো কৌতূহলী ও বিস্মিত এই সঙ্গীত ঘরানা সম্পর্কে।
    উল্লেখ্য বিশ্ব দরবারে ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পের বিশেষ করে যন্ত্রশিল্পের উপস্থাপনার কাজটি কিন্তু বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেব করে গেছেন। 1935- 36সাল নাগাদ ভারতের কিংবদন্তী নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের নৃত্যদলে যোগ দিয়ে আলাউদ্দিন আন্তর্জাতিক সফরে বের হন। নিঃসন্দেহে উদয়শঙ্করের ব্যালে ট্রুপের কেন্দ্রীয়  আকর্ষণ ছিলেন আলাউদ্দিন। অন্যভাবে বলা যায় বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের শিল্পসম্ভারের প্রথম বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন হল এভাবে। পরবর্তীকালে উদয়শঙ্করের সঙ্গে আলমোড়ায় তাঁর ' ইণ্ডিয়া কালচারাল সেন্টারে 'আলাউদ্দিনের সক্রিয় যোগাযোগ গড়ে ওঠে। প্রকৃতপক্ষে হিমালয়ের উত্তরাখণ্ডের সিমলাতে, আলমোড়া থেকে তিন মাইলা দূরে ছিল সেন্টারটি। সেখানে কথাকলি শেখাতেন শঙ্করণ নাম্বুদ্রি, ভারতনাট্যম কননপ্পা পিল্লাই, মণিপুরী নৃত্য শেখাতেন আম্বি সিংহ। আর এসব রথী মহারথীদের সঙ্গে সঙ্গীত শিক্ষাদানে ছিলেন বাবা আলাউদ্দিন। এই কেন্দ্রে প্রথিতযশা বিপুল সংখ্যক নৃত্য ও সঙ্গীত শিক্ষার্থীর সমাবেশ ঘটে। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন গুরু দত্ত., শান্তি বর্ধন, সিমকি, অমলা, সত্যবতী, রমেন্দ্র শর্মা, রুমা গুহঠাকুরতা, জোহরা সেহগাল, প্রভাত গাঙ্গুলি,আজরা, লক্ষ্মীশঙ্কর, শান্তা গান্ধী প্রমুখেরা। এছাড়া রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্করের ভাই রাজেন্দ্র ও দেবেন্দ্র শিক্ষার্থী হিসেবে ছিলেন। কিন্তু চার বছর পরে অর্থাভাবে এমন একটি কেন্দ্র বন্ধ হলে ভারতের নৃত্য ও সঙ্গীত জগতের বিপুল ক্ষতি হল বলা যায়। 
    আনুমানিক 1888 সালে আলাউদ্দিন মদন মঞ্জরীকে বিবাহ করেন। তাঁদের জ্যেষ্ঠ পুত্র আলি আকবর খান, তিন কন্যা শারিজা, জাহানারা ও রোশেনারা।অল্পবয়সে শারিজার মৃত্যু হয়। জাহানারার বিবাহিত জীবনে তাঁর পরিবার সঙ্গীত চর্চায় বাধাপ্রদান করে। দুঃখিত আলাউদ্দিন রোশেনারাকে সঙ্গীতের তালিম না দেবার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু  একদিন ঘরে ফিরে দেখলেন পুত্র আলী আকবর রোশেনারাকে অত্যন্ত নিপুনতায় কোন কিছু শেখাচ্ছেন। কন্যার সঙ্গীত প্রতিভা ও নৈপুন্য দেখে হতভম্ব আলাউদ্দিন পূর্ব সিদ্ধান্ত বাতিল করলেন। এরপর অত্যন্ত যত্ন নিয়েই তিনি কন্যাকে কণ্ঠসঙ্গীতের পাশাপাশি সেতার, সুরবাহারের তালিম দেন। পরবর্তীকালে রোশেনারার বিবাহ হয় আলাউদ্দিনের আরেক প্রতিভাশালী কিংবদন্তী তুল্য শিষ্য বিশ্বখ্যাত সেতার শিল্পী পণ্ডিত রবিশঙ্করের সাথে। জন্মের পর মাইহার রাজ ব্রিজকুমার সিং রোশেনারার নাম দেন অন্নপূর্ণা, রবিশঙ্করের সাথে বিয়ের পর তিনি অন্নপূর্ণা নামেই পরিচিতি লাভ করেন। আলাউদ্দিনের এই কন্যা ও শিষ্যা ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীত জগতে অনন্যসাধারণ প্রতিভা প্রদর্শন করেন। আর সুরবাহার বাদনে তাঁর কৃতিত্ব সর্বজনমান্য। কিন্তু রবিশঙ্করের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় এবং তিনি বোম্বেতে বাস করতে শুরু করেন। এরপর কোনও পাবলিক অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। শুধু সঙ্গীত শিক্ষা প্রদান করেন। বংশীবাদক হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়া, নিখিল ব্যানার্জির মত শিষ্যকে তিনি সঙ্গীত শিক্ষা দিয়েছেন।
    আলাউদ্দিন দেশের রবিতীর্থ শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে একবার সাক্ষাৎকারে যান। অল্প বয়সের ছোট বড় এই দুই মহান ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার অবশ্যই স্মরণীয় ঘটনা। শান্তিনিকেতনে ভ্রমণকালে রবীন্দ্রনাথ সেখানকার প্রথিতযশা ভাস্কর রামকিঙ্কর বেইজকে সঙ্গীতে নিবেদিতপ্রাণ এই মহান সঙ্গীতশিল্পীর একটি প্রতিমূর্তি নির্মাণের কথা বলেন। রামকিঙ্কর বেইজ আরেক মূর্তিমান প্রতিভা। নিউদিল্লিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে স্থাপিত তাঁর নির্মিত ' যক্ষিণী ' মূর্তিটি যেন সাক্ষ্য দেয় রামকিঙ্করের প্রতিভা কতখানি ও ঠিকানা কোথায়। আর শান্তিনিকেতনে তো তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অজস্র। 
    জন্মগ্রাম থেকে একদা সঙ্গীতের যে তৃষ্ণায় আলাউদ্দিন দৌড় শুরু করেন সে দৌড় সমগ্র জীবন ব্যাপী ছিল। একসময় দৌড়টা থামল মাইহারে। থামল বলা যায় কিভাবে? এরপর তো মাজাঘষা, অণ্বেষণ, বিতরণ। সঙ্গীত জগতে নবতর সৃষ্টির আরেক দৌড়। রাগ রাগিণীর বিশাল জগতে বিচরণ করে নতুন সৃষ্টির উন্মাদনা তাঁকে পেয়ে বসল। প্রতিভার সুউচ্চ মিনারে অধিষ্ঠিত থেকে একের পর এক রাগ সৃষ্টি করতে লাগলেন তিনি। রাগ মদনমঞ্জরী ( পত্নীর নামে), প্রভাকলি, ভগবতী, হেমন্ত, সরস্বতী, শোভাবতী, মাধবিশ্রী, হেমভৈরব, মাধবগিরি, হেমবেহাগ, মাঞ্জ খাম্বাজ এসব তাঁর সৃষ্টি। তাঁর সৃষ্ট ' মাইহার ব্যাণ্ড ' বা ' মাইহার বাদ্যবৃন্দ ' ভারতের প্রথম অর্কেষ্ট্রা। সুর সম্পর্কিত জ্ঞানে সমৃদ্ধ ছিলেন বলে সুরের চলাচলের পরিসর বা রেঞ্জ সম্পর্কে সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তাই সরোদ, সেতার, সুরবাহার, সুরশৃঙ্গার, সেনিয়া রবাব,  চন্দ্র সারঙ, সেতার, ব্যাঞ্জো, নলতরঙ্গ যন্ত্র সঙ্গীতের এসব তারযন্ত্র বা অন্যান্য যন্ত্রের শব্দগুণকে সমুন্নত পরিসরে অনায়াসে নিয়ে যেতে পারতেন। 
    1955 সালে আলাউদ্দিন ' মাইহার কলেজ অফ মিউজিক ' স্থাপন করে জীবনের যাত্রাপথে আরেকটি মাইল স্টোন প্রতিষ্ঠা করেন। 1959 সালে তিনি কলকাতায় সর্বশেষ জনসমক্ষে মঞ্চ পরিবেশনা করেন। 1961সাল থেকে কণ্ঠসঙ্গীত বা যন্ত্রসঙ্গীত সবকিছুর জনসমক্ষে মঞ্চপরিবেশনা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করেন। এক সুদীর্ঘ আলোকোজ্জ্বল ব্যতিক্রমী সূষ্টির জীবন পশ্চাতে রেখে, বাবা আলাউদ্দিন খাঁ অবশেষে থামলেন। তাঁর চলা চিরতরে 1972 সালের 6 সেপ্টেম্বর সমাপ্ত হল।
    ব্যক্তি হিসেবে আলাউদ্দিন একজন নিবেদিতপ্রাণ মুসলমান,সাথে সাথে মাইহারের মা সারদা ও শিবের একনিষ্ঠ ভক্ত মহান শিল্পী। তাঁর বাসভবনে হিন্দুর দেবদেবীর চিত্র ও মূর্তি সুসজ্জিত ছিল। প্রকৃতপক্ষে তিনি আগাপাশতলা ধর্মনিরপেক্ষ শিল্পের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ মহান মানুষ ছিলেন।এই প্রমাণ মেলে ফিল্ম ডিভিশনের ডকুমেন্টারী ফিল্ম ' বাবা 'তে।
   বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের সঙ্গীতের কিছু রেকর্ড করা হয়েছিল। সেসব রেকর্ডের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডগুলি হচ্ছে ' অল ইণ্ডিয়া রেডিও ' কৃত রেকর্ডগুলি। 1960 -61 সালের মধ্যে এসব রেকর্ড করা হয়।বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের জীবদ্দশায়ই দেশের নানা সম্মানে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। 1952 সালে তিনি ' সঙ্গীত নাটক একাডেমি ' পুরস্কার পান। 1954 সালে ' সঙ্গীত নাটক একাডেমি ' তাঁকে সারা জীবনের অবদানের জন্য ' লাইফ টাইম ফেলোশিপ ' প্রদান করে। ভারত সরকার প্রদত্ত ভারতীয় নাগরিকদের জন্য তৃতীয় উচ্চতম রাষ্ট্রীয় সম্মান ' পদ্মভূষণ '1958সালে এবং দ্বিতীয় উচ্চতম রাষ্ট্রীয় সম্মান ' 'পদ্মবিভূষণ ' 1971সালে দেওয়া হয়।
    এসব সম্মান প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে শ্লাঘার বিষয়। অবশ্য শিল্পী আলাউদ্দিন সম্ভবত আরো বেশি আনন্দিত হয়েছিলেন আপামর ভারতবাসীর ভালবাসা পেয়ে।
                      
                                 

কাজরী,
৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

    




    

SUNITI Debnath

আমি সুনীতি দেবনাথ, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি শিক্ষিকা। কবিতা, প্রবন্ধ ও ছোটগল্প লিখি। কবিতা আমার প্রিয়ভূমি, শৈশব থেকেই হেঁটে চলেছি...

0 comments: