গুচ্ছ কবিতা
© সুনীতি দেবনাথ
( এক)
দুঃখকে আঁকড়ে এই আঁধারে
সুখের পানসি পেছনে ফেলে
কোথায় চলে যাস
থৈথৈ অথৈ জলে ডুবে ডুবে
এ কেমন অদ্ভুত পরবাস!
তোর ডাগর দুটি বিষাদ চোখে
জল তো নেই মরু চিকচিক শুধু!
( দুই)
ছিলাম তো যাত্রী একই নৌকোর
হঠাৎ উঠলো মাতাল এই ঝড়
নৌকো ডুবে গেলো ভাসছি সবাই
অতল জলের ভয়াল স্রোতের টানে
তবু তীরের কাছে যখন গেলাম পৌঁছে
ওপাশে ডুবন্ত কার না জানি একটি হাত
শত্রু মিত্র জানি না দেখছি যাচ্ছে ডুবে
হাত বাড়িয়ে ধরবো নাকি না বল তো বন্ধু ?
( তিন)
পাহাড়ের ঢালে বিশাল প্রস্তরখন্ডে শেওলা
কোন আদ্যিকালের জানা নেই জানি শুধু
পিছলে পড়তে লাগবে না সময়।
আমাকে অরিত্র বলেছিল এখানে পরীদের
বহুকালের আবাসভূমি, বিশ্বাস করিনি
অবিশ্বাস করিই বা কি করে পরীরা সব পারে।
( চার)
পশ্চাতে ফিরে স্তম্ভিত বজ্রপাতে দগ্ধ বৃক্ষ
দগ্ধ বৃক্ষ অশ্রু ঝরায় জানতাম না মোটেই
পশ্চাতে তাকিয়ে স্তব্ধ জল হারা নদী রুদ্ধ
রুদ্ধ নদীও হৃদয়ে কাঁদে জানা ছিলো নাতো
বৃক্ষ কাঁদে নদী কাঁদে ক্রোধে জ্বলে মৃত্তিকা
এ জ্বলন অন্তহীন আকাশে বাতাসে পরিব্যাপ্ত।
( পাঁচ)
কবিতা লেখাটা বড়ই কঠিন
তার চেয়েও বেশি কঠিন
কবিতা হয়ে ওঠা।
নিঝুম রাতের কিনারায়
রেশমি মসলিনে ঢেকে দেয়া
বাসন্তী পূর্ণিমার চাঁদটি যেমন!
( ছয়)
বেদনার্ত রক্তমাখা পৃথিবী থেকে
অলৌকিক মইয়ের সিঁড়ি ভেঙে
পিতা পিতামহের গড়া স্বর্গে
চলে যেতে হয় একদিন
কোন ধর্মের ধ্বজ্জাধারী হয়ে নয়,
নেহাত মানুষ হয়েই।
কাজরী,
৭ আগস্ট, ২০১৬
0 comments: