লেখা-লেখি

গঙ্গার ঘাট

৬:০৯:০০ PM 0 Comments

















©  সুনীতি দেবনাথ


টেনেহিঁচড়ে আমাদেরকে নৌকোয় ওঠালাম। 
আমরা তিন,  বিগত - যৌবন মাঝি মালদার সুরেশ
তিনে  মিলে এক সাকুল্যে চার।
পাশ দিয়ে ছটফট করে ছুটে গেলো
সাত পবনের এক নাও
টলমল ঢলঢল কেঁপে উঠলাম
হায়! তবে কি নিশ্চিত গঙ্গাপ্রাপ্তি?
হলো না। সময় নেই নেই রে!
সন্ধ্যের এই জাদুমহলে
ভাসছে টলমল, দুলছে দোদুল ছোট্ট দিয়া
শ'য়ে শ'য়ে হাজারে হাজারে দিয়া
গঙ্গা আরতি!
আমরা বেনারসের ঘাটে ঘাটে টহল দিচ্ছি
রথও দেখি কলাও বেচি — এই আর কি!
গঙ্গা মাঈ কি জয়! বাজনা বাজে দিয়া নাচে!
পুন্য পুন্য অঢেল পুন্য! সময় নেই
রাত দশটায় গয়ার ট্রেন।
কত ঘাট কে গুনছে? সুরেশ মাঝি জানে!
সবজান্তা ঘাট বিশারদ, ঐ যে গেলো রাণী ভবানী  
দেখুন সাবজী মাজী ত্রিপুরার মহারাজার ঘাট!
তাই বুঝি? মাঝি জল্দি চলো! মণিকর্ণিকার ঘাট!
মড়া দেখবেন? ইতিহাস ছেড়ে? হবে' খন!
ও ভাই মাঝি, কার বিয়ে ওখানে কেন? শ্মশানে কেন?
বিয়ে নয় মা, সগ্গে চললো!
এতো বাদ্যি! এতো আলো!
এ্যাত্তো জরি চিলিক মিলিক!
কেউ কাঁদেনা নাচের হুল্লোড়!
আগুন শিখা জ্বলছে দাউদাউ! 
এ ঘাটে নেভে না আগুন
এ আবার কি সাধুসন্ত? খুনী নাতো?
বস্তায় পুরে কার শব ঝপাস্ করে জলে ফেলে?
মাঝি বলে যোগী সাধক আগুনে নয় পাথর দিয়ে
দেহের সাথে জল সমাধি দিতে হয়, পুন্যি কাজ মা!
জয় গঙ্গা মা, পতিতপাবনী! সুরধুনী!
তোমার দুষণ কে হরে মা!
সময় নেই ও মাঝি ভাই,  নৌকো ভেড়াও তীরের কাছে!
মা জননী, ভুলবেন না সুরেশ মালদার সবাই চেনে।


কাজরী,
২৩ সেগ্টেম্বর, ২০১৬

SUNITI Debnath

আমি সুনীতি দেবনাথ, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি শিক্ষিকা। কবিতা, প্রবন্ধ ও ছোটগল্প লিখি। কবিতা আমার প্রিয়ভূমি, শৈশব থেকেই হেঁটে চলেছি...

0 comments: