লেখা-লেখি

অন্দরে অন্তরে

৫:১৪:০০ PM 0 Comments







      © সুনীতি দেবনাথ
         

অন্ধকারের চেয়েও গাঢ়তম কোন অন্ধকার
ব্যাপ্ত আজ চারপাশে —
এ অন্ধকার মুছে দিতে চায়
মানবিক সুচেতনা আর নরম বোধকে।

অন্দরে অন্তরে ঢেউ ওঠে সর্বনাশা
কেঁপে ওঠে শিকড়ের আদিম সংসার,
আমি নদীর মত হতে  চেয়েছি বেগবতী
নদীও যে ভাঙ্গার খেলায় তীর ভাঙ্গে,
 ঘর ভেঙ্গে মন ভেঙ্গে চটুল খেলায়
মেতে ওঠে সর্বনাশা আরেক নেশায়
ভাবিনি সেকথা কোনদিন, তাই
হয়ে গেছে ভুল, অবশেষে কান্নানদীর
বিবশ বিকল মরা স্রোতের ঢেউ গুণি।

নদীও যে একদিন মরে যায় তীব্র
 পিপাসার বালুচরে ধু ধু হাহাকারে
জানিনি সেকথা কোনদিন, তাই
হয়ে গেছে ভুল, একদম বড়সড়।
স্রোত চাই জল চাই নদীর প্রার্থনা
শেওলার ভাঁজে ভাঁজে কেঁদে চলে,
পলিমাটি ধুয়ে যায় বালি শুধু ওড়ে
চিকচিক করে চর তপ্ত দুপুরে নির্জনে।
হু হু করে কেঁদে চলে বিমনা বাতাস
কোথা তুমি স্রোতোবতী সাগরে যাবে
না নাকি আর কোনদিন,
আর কোনকালে ঢেউয়ের দোলায়?

স্রোতহীন গতিহীন আবদ্ধ প্রবাহে শুয়ে
অন্ধকার চরে অন্দরে অন্তর খুঁড়ে চলে
পেয়ে যায় নদী ধ্বংসস্তুপে অপরূপ চিত্রশালা প্রাণের স্পন্দনহীন ছবি,
খণ্ড খণ্ড ঘরবাড়ি ভাঙ্গাচুরা সবকিছু
তারি মাঝে কোলে শিশু জীবন্ত ফসিল
চোখ বুজে বসে আছে শাশ্বত জননী
মৃদু হাসি মুখ তার আলোর ঠিকানা।
অন্যপাশে মুণ্ডহীন কবন্ধের অগুন্তি
সারি শুয়ে আছে  কতকাল কে জানে!

এই অন্ধকারে এই কালান্তরের কূলে
সৃষ্টির পরম বাণী অন্দরে  অন্তরে হাসে
স্রোতের আবর্তের মত জননীর হাসির মত আলোর স্পন্দনের মত অদ্ভুত রূপে
যতই বিনাশী হাওয়া হোক উতরোল একদিন
আলোর প্রবাহে শিশু কোলে
জননীই নিয়ন্ত্রী হবে নতুন সভ্যতার।


কাজরী,
২৮ মার্চ, ২০১৫

SUNITI Debnath

আমি সুনীতি দেবনাথ, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি শিক্ষিকা। কবিতা, প্রবন্ধ ও ছোটগল্প লিখি। কবিতা আমার প্রিয়ভূমি, শৈশব থেকেই হেঁটে চলেছি...

0 comments: