চরৈবেতি
© সুনীতি দেবনাথ
হিরণ্যরেতা সব নদী মাটি আকাশ ছুঁয়ে
কালসমুদ্রে মিশে যায়
পথে যেতে কখনোসখনো দেখা হয়
অন্য কোন নদীর সাথে
যার জলে কুরচি ফুুল ভাসে,
কথাবার্তা কিছু কিছু হয়
মনের বেদনার আদানপ্রদানও
নদীজল কখনো শান্ত থাকে না
কলকল ভাষে সৃষ্টির গোপন কথা
বলে বলে যায় নিরন্তর।
জন্ম থেকে সত্তায় মিশে যায়
একটি পরম সত্য চরৈবেতি
তাই তরঙ্গে তরঙ্গে ফুলকেলি চললেও
চলা তো থামে না!
চলছে বিশ্ব চরাচর শূন্যরূপী অনন্ত আকাশ,
চলছে পৃথ্বী মহাকাশ ব্যাপী তারকা
গ্রহ নক্ষত্র কী বিশাল পরিমণ্ডল!
চলছে প্রাণ অবিরাম নিষ্প্রাণ যা তাও
গতিহীন কোন কিছুই তো নেই।
আপাত জড় যা নিষ্প্রাণ তারও এক
অতুলনীয় গতি আছে পরিবর্তনের পথে।
প্রাণ যা সেতো এক অনির্বচনীয় অদৃশ্য আলো
প্রাণের চলাচল দৃশ্য নয় অনুভববেদ্য,
যা কিছু দৃশ্যমান অদৃশ্য আলোময় প্রাণ
কোন এক অনুপম সূত্রে গেঁথে রাখে,
দৃশ্যাদৃশ্য সব কিছু তাই চলিষ্ণু চঞ্চল
নদীর মত প্রাণ চির গতিশীল।
মৃত্তিকার গভীরে শিকড়ের সংসার ছড়িয়ে
যে বৃক্ষ আপাত স্থিতিশীল বলে অনুভূত হয়
সে কি স্থির মনে তো হয় না
জন্ম বৃদ্ধি স্থিতি গতি মৃত্যুর আশ্চর্য রসায়নে
বৃক্ষও তো চির চলমান জানা হয়ে যায়।
বীজের অঙ্কুর থেকে উদ্ভাসিত জীবন
বৃক্ষকে জড়িয়ে থাকে সুদীর্ঘ কালের বলয়ে,
কুঁড়ি থেকে পুষ্পে বিকাস আশ্চর্য বিস্ফোরণ!
স্থির কাণ্ডে গগন বিলাসী বৃক্ষ গতির
অনুপম বিভাসে চলমানতার মৌল কথা বলে।
কাজরী,
৩০ এপ্রিল, ২০১৭
0 comments: