ভিন্ন কথামালা
© সুনীতি দেবনাথ
সময় হেঁটে যায় কখনো কাঁঠালপাতা বেয়ে
কখনও বা কেয়াঝোপের কর্কশ ধার ঘেঁষে
ঝিরিঝিরি নারকেল পাতাকে আলতো ছুঁয়ে
জিজ্ঞেস করে না কিছু উদাসীন চলে যায় শুধু।
সকালের তরুণ নরম আলো শিশুটির মতন
হেসে খেলে এ জানালা ও দুয়ারে উঁকিঝুঁকি দেয়
ফুলের কুঁড়ির সাথে খুনসুটি করে পাখির সুরে মেতে
ভোরের রক্তবর্ণ জানুতে লুটোপুটি খেলায় মেতে ওঠে।
আর একাকী এক জানালায় সে বসে থাকে
সেই মেয়েটি ফুলকারি নেত্রপল্লবে যার জলসাজ নয়
আগুনের ফুলকিরা সব মৃত জোনাকির মত
ভিড় করে আগুন হয়ে সময়ের হাত ধরে চলে।
ও মেয়েটি বিদ্যুৎলেখা হয়ে লকলকে শিখার মত
হতে চেয়েছিল একদিন স্বপ্নের নিভৃত ঘরে,
সূর্যঘড়ির শব্দের ছন্দে স্বপ্ন সব ফুরফুরে উড়ে গেলো,
সবুজ কুয়াশা ভেদ করে বুনো জল নিচে নেমে এলো
সবুজ তারার আলো ভেদ করে শিশিরের কর্কশ শুভেচ্ছায়
সেই লুটেরা দস্যুরা ভিজে পায়ে সেই রাস্তা বেয়ে নেমে আসে
যে রাস্তায় শুকিয়ে আছে সরল মৃত শিশুদের অবাক রক্ত।
নৃশংস পশুর মত সেই ভোর রাতে যুবতী মেয়েটির
সব কিছু লুটপাট করে আবার ঝরালো রক্ত তারা।
তারপর বহুদিন হলো নিজ হাতে রক্ত মুছে নিয়ে
এক প্রতিজ্ঞার মত জীবনের কাছে বহু প্রশ্ন নিয়ে আত্মহত্যা এড়িয়ে , আফিম ফুল আবৃত অধিবিদ্যা যেন —
বহু দিন বহু রাতের খেয়া পারাপার দেখে যায়
খোলা জানালায় আলোয় আঁধারে স্তব্ধ মগ্নতায়
নারকেল পাতায় নরম সকাল আলপনা আঁকে
আর উদ্ভ্রান্ত সময় উদাসী হাওয়ার মত হেঁটে যায়
মেয়েটির রক্তে বেজে ওঠে দুরন্ত দামামা উদ্দাম
জীবনের কাছে প্রশ্ন তার স্বপ্নের কথা, সবুজ সব
পাতার নবীনতার কথা, ভোরের আলোর কথা
কখন বলবে তুমি জীবন? আমি হার মানিনি,
পর্বতের বিশাল মহিমায় দেখি প্রতিজ্ঞা অটল।
কাজরী,
২১ নভেম্বর, ২০১৫
0 comments: