দহনবেলা
© সুনীতি দেবনাথ
প্রেমে স্বাচ্ছন্দ্যে বৈভবে থেকেও দেখেছি
কোন আগুনে না পুড়েও বুকে ছিল তাঁর
অনির্দেশ্য অনির্বচনীয় কোন এক দহনজ্বালা
তাই হঠাৎ রাতের আঁধারে নাক্ষত্রিক আকাশে
চোখের পাল তুলে আঁধারের ঢেউ ঠেলে ঠেলে
বিষাদিত দহনবেলায় একা জানালায় আমার মা।
জেনে গেছি সেদিনই সব নারীর আছে গোপন
একান্ত এক যাপিত জীবনের দ্রোহহীন দহনবেলা।
জন্মেছিলাম ঔপনিবেশিক দাহে দ্রোহকালে —
শিশুমনে স্বাধীনতা এঁকে দিল খণ্ডিত স্থায়ী মানচিত্র,
এই টুকরো দেশের টুকরো মাকে নিয়ে আজো দহন জ্বালা —
এপারের মানুষ ওপারের দিকে হাত বাড়ালে মিতালীর
কাঁটাতারের নির্মম নিরীহ অবস্থান নিষ্ঠুর বোবা চোখে চায়,
এযুগের নিত্যদাহ এতদিন দ্রোহহীন হয়েও দহনবেলায়
এ দহন শীতল দহন ভালোবাসার শীতল সমাধি এন্টার্কটিকায়।
শতাব্দীর ক্যানভাসে বর্ণহীন চিত্রশালায়
নিহত মানবতার লাশের পাশে
অগনিত শিশুর নিথর নিঝুম শীতল লাশ—
ভয়ঙ্কর এমন ছবি আঁকে নিষ্ঠুর সন্ত্রাসী।
একটা ক্যানসার সারাটা পৃথিবীর অস্থি মজ্জা
মাংসপেশীর সুললিত আখ্যানে নিষ্ঠুর ঘাতক,
এর নাম যদি অবক্ষয় হয়, এ মারণব্যাধিতে
অন্তরের সকল সুমিত সৃষ্টি, সুস্থিত মানবিক
বর্ণময় আলোকিত প্রকাশ অচিরেই দহনবেলায়
আরেক হিরোসিমা নাগাসাকি হবে, নষ্ট হয়ে যাবে।
এ দহনবেলায় আর কতকাল নিষ্ক্রিয় যোদ্ধার ভূমিকায়
লবকুশ হয়ে অসহায় চোখে শুধু দেখে যেতে হবে?
কোথাও কি একটি দুটি করে প্রাণের কণিকা
জেগে উঠে দেবে না ঘোষণা
বেঁচে থাকার মহামন্ত্রধ্বনির,
দহনবেলায় উঠবে না কি কলরোল?
কাজরী,
১৭ মে, ২০১৬
0 comments: